চাটিকিয়াং রুমানের ব্লগ

বৃহস্পতিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০১১

মনে পড়ে যায় শৈশবের সেই দিনগুলো


সেদিন অনেক দিন পর নানার বাড়িতে গেলামঅনেকদিন পর বলতে প্রায় ৪/৫ মাস পর নাগরিক কিংবা পড়ালেখার ব্যস্ততার কারণে আগের মত তেমন কোথাও বেড়াতে যাওয়া হয়নাহয়ত সেদিনও যাওয়া হতোনানানার বাড়ির পাশে আমার চাচাত বোনের শ্বশুর বাড়িতে মেজবানের দাওয়াত ছিলযার কারণে ঐদিকে যাওয়ার কারনে একসাথে নানুদের দেখে আসা

নানার বাড়িতে ঢুকে নানুর সাথে কুশলাদি বিনিময় করার পর নানু আমাকে জিজ্ঞেস করলো- পড়ালেখার কি অবস্থা? আমি বললাম সামনে পরীক্ষা, দোয়া করিওনানু বললো- পরীক্ষা দিতে দিতে তোর আর বিয়ে করা হবেনাকথাটা শুনে আমার পাশে থাকা ছোট মামা, মামি আর পিচ্ছি কাজিনরা খুব করে হাসলামতখন নানুকে বললাম- গ্রাজুয়েশন শেষ হতে আর বেশি দিন নেই, তখন তোমরা না হয় তোমাদের নাতিনকে নিয়ে এসো 

নানার বাড়ির পাশেই রয়েছে সুন্দর একটা পুকুরশৈশবে যখন নানার বাড়িতে যেতাম তখন কাজিনরা মিলে পুকুরে লাফালাফি করে গোসল করার স্বাদ মিঠাতাম, পানিতে লাফালাফি করার কারণে চোখ যখন লাল হয়ে যেত তখন পুকুরে দুষ্টুমির পর্ব শেষ হত বিশেষ করে যখন বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হত তখন কয়েক দিনের জন্য নানার বাড়িতে গিয়ে থাকা হতকারণ ঐ সময়ে সব কাজিনরা নানার বাড়িতে কয়েকদিনের জন্য যেতামযাওয়ার সাথে সাথে শুরু হত আমাদের দস্যি-পনানাস্তা করেই কাজিনদের সাথে বের হয়ে পড়তাম দৌড়াদৌড়িতেনানার বাড়ির পাশেই বিল থাকার কারণে বিলের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছুটে বেড়াতামবিলের পাশেই রয়েছে খালসেই খালে সাতার কাটতামশীতের মৌসুমে বিলে ক্রিকেট-ফুটবল খেলতামসারাদিনের এই দস্যি-পনা শেষে রাতে যখন ঘুমাতে যেতাম তখন শুরু হত অন্যান্য কাজিনদের জ্বীন-ভূতের ভয় লাগানোর পালা কাজিনদের মনে জ্বীন-ভূতের ভয় ঢুকিয়ে দেয়ার কারণে পরেরদিন সকালে মা'র বকা শুনতে হত কারণ মা'র কাছে কাজিনদের কর্তৃক আমার বিরুদ্ধে নালিশ যেত যে আমি কাজিনদের মনে জ্বীন-ভূতের ভয়-ভীতির সঞ্চার করেছি

কিন্তু নানার বাড়ির আগের সেই জৌলুস এখন আর নেইকারণ সময়ের পরিক্রমায় সব কিছু যেন পাল্টে গেছেনানু ভাইয়াও মারা গিয়েছে আজ প্রায় ৩ বছর হলো আগের মত যাওয়া হয়না নানার বাড়িতেতাছাড়া দিন দিন বয়সটা বাড়ছেআগের সেই বয়স আর নেই যে মন চাইলেই শৈশবের মত ছুটাছুটি করবো

সেদিন যখন নানার বাড়িতে গেলাম তখন কেন জানি শৈশবের কথা খুব করে মনে পড়ে গেল যে পুকুরে গোসল করার সময় অসম্ভব দুষ্টুমি করতাম সেই পুকুর ঘাটে বেশ কিছু সময় বসে ছিলামকেন জানি নানার বাড়ির পুকুরটা আমার বেশ ভাল লাগেপুকুরের চারিদিকে গাছ, চমৎকার মৃদু হাওয়াদেখলাম ছোট ছোট মাছ আপন খুশিতে চষে বেড়াচ্ছে দল-বল নিয়ে

নানার বাড়িতে যাওয়ার আগে একই দিন সকালে নানুকে ফোন করেছিলাম যে আমরা ঐদিকে যাবতাই নানুকে অনুরোধ করলাম- কয়েকদিনের জন্য আমাদের বাড়িতে যেন বেড়াতে আসেচাচাত বোনের শ্বশুর বাড়ি থেকে মেজবানের দাওয়াত খেয়ে আসার পথে নানার বাড়ি থেকে বেড়িয়ে সাথে করে নানুকে নিয়ে এসেছিলাম আমাদের বাড়িতে

মঙ্গলবার, ৪ অক্টোবর, ২০১১

মায়া সভ্যতা



১০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের দিকে মধ্য আমেরিকার নিম্নভূমির বনাঞ্চলে এক অদ্ভুত সভ্যতার বিকাশ ঘটেছিল। “মায়া” নামে এই সভ্যতা যে জনগোষ্ঠী নির্মাণ করেছিল, তারা অধিকাংশ প্রাথমিক সভ্যতা নির্মাণকারীদের মতো শহরে জীবন যাপন করত না। বরং তাদের বসবাস ছিল ছোট ছোট কৃষি-গ্রামে। তারা পিরামিডের মতো দেখতে উপাসনাগৃহ ও উৎসবস্থল তৈরি করেছিল। এগুলো ছিল তাদের ধর্মীয় ও রাজনৈতিক জীবনের কেন্দ্রবিন্দু। মায়াদের ৪টি প্রধান কেন্দ্র ও অনেকগুলো ছোট ছোট কেন্দ্র ছিল। প্রধান কেন্দ্রগুলোর একেকটি থেকে দেশের প্রায় এক চতুর্থাংশ এলাকায় শাসনকার্য চালানো হত।


মায়াদের তৈরিকৃত একটি উপাসনাগৃহ

মায়া সভ্যতায় চিত্র-লিখন পদ্ধতি ও নির্ভুল পঞ্জিকা ব্যবস্থা চালু ছিল। তাদের জ্যোতির্বিদরা সূর্যগ্রহনের দিন তারিখ সম্পর্কে ভবিষ্যৎ বানী করতে পারত। মায়া শিল্পীরা পাথর খোদাই শিল্পে ছিল অতুলনীয়।


মায়া সভ্যতার পঞ্জিকা

কিন্তু ৯০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে মায়ারা তাদের সভ্যতার কেন্দ্রগুলো ছেড়ে চলে যায় এবং তাদের স্থিতিশীল জীবনব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ে। ১৫ শতকে স্পেনীয়রা যখন ওই এলাকায় আসে তখন নিজেদের মধ্যে লড়াই করতে করতে নিঃশেষ প্রায় মায়া জনগোষ্ঠীর কাছ থেকে তাদের খুব বেশি প্রতিরোধের সম্মুখীন হতে হয়নি।


মায়া সভ্যতার একটি প্রাচীন নিদর্শন

অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে, সেই মায়া সভ্যতার বর্তমান অবস্থান কোথায়? বর্তমানে মায়া সভ্যতার অবস্থান হচ্ছে- মেক্সিকোর দক্ষিণাঞ্চল, গুয়াতেমালা, বেলিজ, এল সালভেদরের উত্তরাঞ্চল এবং হন্ডুরাসের পশ্চিমাঞ্চলে।


প্রাচীন মায়া সভ্যতার বর্তমান মানচিত্র



Share it button

সমতল Copyright © 2011 | Template created by O Pregador | Powered by Blogger